বুধবার, ২৯ মার্চ ২০২৩, ০৪:৫৯ অপরাহ্ন
বিডি নিউজ ৭১ ডেস্কঃ
করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে কার্যকর ওষুধ রেমডেসিভির উৎপাদনে যাচ্ছে বাংলাদেশের বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস। এ মাসেই এই পরীক্ষামূলক অ্যান্টিভাইরাল ওষুধটি উৎপাদন করবে বেক্সিমকো। যুক্তরাষ্ট্রের গিলিয়াড সাইয়েন্সেস এই ওষুধের মূল প্রস্তুতকারী।
কোভিড-১৯ রোগের বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি কার্যকারিতা দেখিয়েছে রেমডেসিভির। গিলিয়াডের নিজস্ব পরীক্ষায়ও দেখা গেছে যে, এই ওষুধ সেবনে রোগীদের পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের ওষুধ উৎপাদন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ এই ওষুধ ব্যবহারের সাময়িক অনুমতি দিয়েছে।
বেক্সিমকো’র চিফ অপারেটিং অফিসার রাব্বুর রেজা জানান, বেক্সিমকো এ মাসেই এ ওষুধটি উৎপাদনে যাচ্ছে এবং প্রথমেই সরবরাহ করা হবে দেশের বাজারে।
রাব্বুর রেজা জানান, মানুষের শিরায় প্রবেশ করিয়ে এই ওষুধ প্রয়োগ করতে হয়। প্রতি ডোজ ওষুধের দাম পড়বে ৫ থেকে ৬ হাজার টাকা। গুরুতর অসুস্থ রোগীদের মোট ৫ থেকে ১১ ডোজ রেমডেসিভির প্রয়োজন হতে পারে। তবে রোগীর ঠিক কতটুকু প্রয়োজন হবে তা গবেষণা সম্পন্ন হলেই বলা যাবে। রোগের তীব্রতার উপর নির্ভর করবে রোগীর কতটুকু ওষুধ প্রয়োজন হবে। বেক্সিমকোর মূল্য অনুযায়ী একটি পূর্ণ কোর্স ওষুধের জন্য খরচ হতে পারে ২৫ থেকে ৬৬ হাজার টাকা।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, রেমডেসিভির উৎপাদনের প্যাটেন্ট রয়েছে গিলিয়াডের। তাদেরই এই ওষুধ প্রস্তুতের একচেটিয়া সত্ত্ব রয়েছে। তবে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য আইন অনুযায়ী, বাংলাদেশসহ জাতিসঙ্ঘ স্বীকৃত স্বল্পোন্নত দেশগুলো এসব প্যাটেন্ট অগ্রাহ্য করে দেশে সহনীয় মূল্যে উৎপাদন করতে পারে। এর আগে বেক্সিমকো কোভিড-১৯ রোগের বিরুদ্ধে আরেকটি অ্যান্টিভাইরাল ওষুধ ফাভিপিরাভির ও ম্যালেরিয়ার ওষুধ হাইড্রক্সিক্লোরোকুইনও উৎপাদন করছে।
রাব্বুর রেজা জানান, বাংলাদেশ এই ওষুধ অন্যান্য স্বল্পোন্নত দেশগুলোতেও রপ্তানি করতে পারবে। এছাড়া ইউরোপের কিছু দেশ ইতোমধ্যে এই ওষুধ আমদানি করার আগ্রহ প্রকাশ করে বেক্সিমকোকে চিঠি লিখেছে। তবে তিনি ওই ইউরোপীয় দেশগুলোর নাম জানাতে রাজি হননি।
রাব্বুর রেজা জানান, ‘আমরা জরুরী পরিস্থিতিতে এই ওষুধ রফতানির জন্য সরকারের অনুমোদন চাইতে পারি। তবে আমরা আগে আমাদের নিজ জনগণের জন্য সরবরাহ করবো।’
রেমডেসিভির প্রথমে ইবোলা ভাইরাসের চিকিৎসায় প্রস্তুত করা হয়েছিল। এই ওষুধ নতুন এই করোনাভাইরাসসহ কিছু ভাইরাসের পুন:উৎপাদনের প্রক্রিয়াকে অকার্যকর করে দেয়। ফলে রোগীর ইমিউন সিস্টেমকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে না এই ভাইরাস।
যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি সংস্থা ন্যাশনাল ইন্সটিটিউটস অব হেলথ এর পরীক্ষা অনুযায়ী, সাধারণ রোগীদের তুলনায় এই ওষুধ সেবনকারী রোগীদের হাসপাতালে থাকার হার ৩১ শতাংশ কমে যায়। অর্থাৎ রোগীরা তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে উঠেন। তবে এই ওষুধ সেবনে মৃত্যুর হার খুব একটা কমেনি।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশে স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস ও বিকন ফার্মাসিউটিক্যালসহ আরো ৭টি বাংলাদেশী ওষুধ কোম্পানি এই ওষুধ উৎপাদনের সরকারি অনুমতি পেয়েছে।
বাংলাদেশ ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরের কর্মকর্তা মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন জানান, স্থানীয় চাহিদা পূরণ হলে পরে রফতানীর অনুমোদন দেয়া হবে, এর আগে নয়। এ কারণে বেক্সিমকোকে আগে দেশীয় বাজারে ওষুধ সরবরাহ করতে হবে।
আপনার মন্তব্য প্রদান করুন...