শুক্রবার, ০২ জুন ২০২৩, ০৩:২৯ অপরাহ্ন
বিডি নিউজ ৭১ ডেস্কঃ
নারায়ণগঞ্জে আওয়ামী লীগের রাজনীতি পাল্টে যেতে শুরু করেছে। সিটি করপােরেশন নির্বাচনের পর উলটপালট সব কিছু। একক নেতৃত্ব আর থাকছে না। থাকবে না প্রভাবশালী এমপি শামীম ওসমানের কর্তৃত্ব। কমিটিতে আর তার লােকজনদের সামনের সারিতে আনা হচ্ছে না। ইতােমধ্যে সিটি করপােরেশন নির্বাচনে নবীন প্রবীণদের মধ্যে যেসব নেতারা আলােচনায় তাদের মধ্যে নবীন পাঁচজন আসছেন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে। আগামী নারায়ণগঞ্জে এ ৫ জনের কর্তৃত্বে থাকতে পারে রাজনীতির নিয়ন্ত্রন।
আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা জানান, এবারের সিটি করপােরেশন নির্বাচনে এমপি শামীম ওসমানের প্রভাব খর্ব হতে শুরু করেছে। ইতােমধ্যে তার নিয়ন্ত্রনে থাকা ছাত্রলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও শ্রমিক লীগের কমিটি বিলুপ্ত হয়েছে। | একই পথে হাঁটছে জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের কমিটি। এবার কমিটিতে পরিচ্ছন্ন ও নির্বাচনে ভূমিকা রাখা | নেতাদের প্রাধান্য দেওয়া হবে। সিনিয়র নেতাদের মধ্যে নির্বাচন ৫ তরুণ নেতা নিজেদের যােগ্যতা প্রমাণ রাখতে পেরেছেন। এবার এসব নেতাদের সামনে রেখেই আগাতে চায় প্রবীণ নেতারাও। তারাও নবীন এসব নেতাদের উপর আস্থা রাখতে চাচ্ছেন। তাছাড়া নেতৃত্ব দেওয়ার পাশাপাশি এসব নেতাদের বিরুদ্ধে কদাচিৎ অভিযােগ থাকলেও অনেকেই নিজেরা সাবলীল। তাছাড়া তাদের নিজেদের মধ্যেও রয়েছে চমৎকার বােঝাপড়া। মূলত এসব নেতাদের উপর সিটি করপােরেশনের মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভীরও ছায়া আশীর্বাদ রয়েছে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, ফতুল্লার শ্রমিক লীগ নেতা কাউসার আহমেদ পলাশ এখন দলের কেন্দ্রীয় সাংগঠকি সম্পাদক। গত ২৪ ডিসেম্বর শহরের দেওভােগে রাসেল নগর পার্কে যে বিজয় সমাবেশ হয় সেখানে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন। পরে ১৪ জানুয়ারী শহরে মেয়র প্রার্থী আইভীর পক্ষে মিছিলও নেতারা ছিলেন। এ দুটি সমাবেশেই কাউসার আহমেদ পলাশের লােকজন উপস্থিত ছিলেন। তাদের হাজার হাজার নেতাকর্মী সেদিন শহর কাঁপিয়েছেন। তাছাড়া আইভীর সুনজরে আছেন পলাশ।
একই অবস্থা গােলাম দস্তগীর গাজীর ছেলে গােলাম মর্তুজা পাপ্পা। তিনিও এ দুটি সমাবেশে ব্যাপক শাে ডাউন দেখিয়েছেন। সবেশষ মন্ত্রী গাজী নিইে ১৯ জানুয়ারী শহরের দেওভােগে চুনকা কুটিরে মেয়র আইভীর বাসায় ছুটে আসেন। যদিও নির্বাচনের আগে ও পরে একাধিকার এসেছিলেন পাপ্পা গাজী। তাছাড়া তিনি নিজে বিসিবির পরিচালকের পাশাপাশি রূপগঞ্জে রাজনীতিতেও প্রভাব রাখতে শুরু করেছেন। চাচ্ছেন নারায়ণগঞ্জের রাজনীতিতে যুক্ত হতে। বিসিবির পরিচালক নির্বাচনের পর শহরে তার পক্ষে ব্যানার ফেস্টুন সাটানাে হলেও সেগুলাে অজ্ঞাতার ছিড়ে ফেলে। আইভী অনুগামী একটি গ্রুপও চাচ্ছে পাপ্পা স্থানীয় রাজনীতিতে যুক্ত হােক।
সােনারগাঁয়ের সাবেক এমপি আবদুল্লাহ আল কায়সার এবার সিটি নির্বাচনে বেশ সক্রিয় ছিলেন। যদিও ২০১৬ সালের সিটি নির্বাচনেও তিনি সক্রিয় ছিলেন। ৫ বছর পর এবার তিনি শহরে একাধিকবার শাে ডাউন দেখিয়েছেন। তাকে অনেক আন্দোলনের পর সােনারগাঁও থানা আওয়ামী লীগে সদস্য পদ দেওয়া হয়। তাঁকেও আগামীতে গুরুত্বপূর্ণ পদে আসীন করা হতে পারে।
জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সুফিয়ানও দলীয় মনােনীত নৌকা প্রতিকের প্রার্থী ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভীর পক্ষে কাজ করেছেন। প্রতিদিন সকাল থেকে শুরু করে গভীর রাত পর্যন্ত কাজ করে গেছেন। বিশেষ করে সিটি কর্পোরেশনের বন্দর এলাকায় একচেটিয়াভাবে আইভীর পক্ষে কাজ করেছিলেন তিনি। ভােটের জন্য জনগণের দ্বারে দ্বারে গিয়ে হাজির হয়েছেন। সেই সাথে তার অনুসারি নেতাকর্মীদেরও বিভিন্ন দিক নির্দেশনা দিয়ে আসছেন আইভীর জয় নিশ্চিত করার জন্য। ফলশ্রুতিতে শেষ পর্যন্ত আইভীরই জয় এসেছে।
মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জিএম আরাফাতও এবারের সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দলীয় প্রার্থী ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভীর পক্ষে বিরামহীনভাবে কাজ করে গেছেন। যখন যেখানে তাকে প্রয়ােজন হচ্ছে তিনি সেখানেই ছুটে গিয়েছেন। দলীয় প্রার্থীকে জয়ী করানাের লক্ষ্যে ভােটারদের দ্বারে দ্বারে ছুটে বেড়িয়েছেন। সামান্য সময়ের জন্য হলেও নিজেকে একটু বিশ্রাম দেননি। সেই সাথে শেষ আইভীর জয় হয়েছে।
ছাত্রজীবনে দাপুটে ছাত্রলীগ নেতা ছিলেন জিএম আরাফাত। সেই ছাত্রজীবন থেকেই নীতি নৈতিকতার পক্ষে জোড়ালাে ভূমিকা রেখে আসছেন। এখনও সেই নীতি নৈতিকার উপড় থেকেই রাজনীতি করে আসছেন। তারই ধারাবাহিকতায় এবারের সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী পক্ষে লড়াইয়ে নেমেছেন।
আপনার মন্তব্য প্রদান করুন...