বৃহস্পতিবার, ১৯ মে ২০২২, ১১:৫৮ পূর্বাহ্ন
বিডি নিউজ ৭১ ডেস্কঃ
বাঙালির সবচাইতে বড় সাংস্কৃতিক উৎসব হলো বাংলা নববর্ষ। বাংলাদেশে এমন কোনো গ্রাম নেই পরিবার নেই যেখানে এ উৎসবের ছোঁয়া লাগে না। সময়ের বিবর্তনে হয়তো অনেক নতুন উপাদানের বাড়াবাড়ি কিন্তু- মূল সুরটি এখনো হারিয়ে যায়নি। শহরে হয়তো বাণিজ্যিক উপাদান যুক্ত হয়েছে কিন্তু গ্রাম বাংলার মানুষ এখনো ঐতিহ্যকে ধারণ করে বাংলা নববর্ষ পালন করছে।
দেশের সকল জনগনকে নববর্ষের শুভেচ্ছা জ্ঞাপন করেন আলহাজ্ব কাউসার আহমেদ পলাশ, সাংগঠনিক সম্পাদক, কেন্দ্রীয় কমিটি, জাতীয় শ্রমিকলীগ।
মনে পড়ে আমাদের পার্শ্ববর্তী ঠাকুর বাড়ির জমজমাট চৈত্র সংক্রান্তি বা হালখাতার কথা। ছোটবেলায় অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করতাম কবে হালখাতা হবে আর আমরা ঠাকুর বাড়িতে যেয়ে নাড়–, তিলের খাজা, জিলাপি, খই-মুড়ি খাব। পরদিন তো বৈশাখী মেলা আছে। দলবেঁধে আমরা বাড়ির ছোটরা যেতাম গ্রামের মাঠে বৈশাখী মেলায়। একটি গোটা সিদ্ধ ডিম কিংবা পুরো একটা আলুর দম কাঠিতে ঢুকিয়ে খাওয়ার যে আনন্দ পেয়েছিলাম, আজ আমার সন্তানেরা বড় বড় ফাস্টফুডের দোকানে গিয়ে বার্গার, সাসলিক কিংবা সেন্ডুইচ খেয়েও কি সে আনন্দ পায়? আনন্দ পাবার সে পারিপার্শ্বিক পরিবেশ কিংবা মানসিক প্রস্তুতি কি তাদের আছে? নেই। চরকিতে চড়া, বায়োস্কোপ দেখার খুশি খুশি মুখ কি আজ সিনেপ্লেসে পাওয়া যায়? নেই। হয়তো অনেকে বলবে আমরা আধুনিক হয়েছি, প্রযুক্তি এগিয়েছে- পুরনোকে আঁকড়ে ধরে কী লাভ? আমি বলব, সেই প্রকৃত আধুনিক যে নিজের অস্তিত্বের ওপর দাঁড়িয়ে নতুনকে আবাহন করে।
বাঙালির সবচাইতে বড় নববর্ষের এ উৎসব অসাম্প্রদায়িক চেতনার মূর্তপ্রতীক। মানুষে মানুষে মৈত্রীর বন্ধন, ভ্রাতৃত্ববোধ গড়ে তোলার পাশাপাশি ভাবিকালের মঙ্গল ও শুভ কামনায় এর প্রতিটি উপাদান থাকে সজিব। শোষণ, শাসণ, তোষণ কিংবা পশ্চাদপদ ভাবাদর্শ কোনো কিছুই বাঙালির নিজস্ব শক্তির অফুরন্ত আঁধার থেকে আমাদের বিচ্যুত করতে পারেনি-পারবেও না কোনোদিন। সংস্কৃতির জয়-বাঙালির জয়। পহেলা বৈশাখ বাঙালির আত্মপরিচয়ের ঠিকানা। বিশ্বব্যাপী সব বাঙালির মৈত্রী, সম্প্রীতি ও চেতনার ঐক্যসূত্রের জাগরণের দিন বাংলা নববর্ষ ১লা বৈশাখ। শুভ নববর্ষ।
আপনার মন্তব্য প্রদান করুন...