বুধবার, ২৯ মার্চ ২০২৩, ০৩:৩৯ অপরাহ্ন
বিডি নিউজ ৭১ ডেস্কঃ
জাতীয় শ্রমিকলীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আলহাজ্ব কাউসার আহমেদ পলাশ বলেন, ইসলামের ৫ম স্তম্ভ হজ্জ। যেকোনো সামর্থ্যবান ব্যক্তির জীবনে একবার হলেও হজ্জ করা ফরজ। শারীরিক সক্ষম ও আর্থিকভাবে সচ্ছল প্রত্যেক মুমিন মুসলমান বায়তুল্লাহর কালো গিলাফ আর কালো পাথর ছুঁয়ে জীবনের সব অপরাধের জন্য ক্ষমা পেতে চান। যাদের চোখের জল আর মনের আকুতি কবুল হয় আল্লাহ তাদের ক্ষমা করে দেন। লাব্বাইক ধ্বনিতে মুখরিত আকাশ বাতাস। হজ্জ এমন একটি ইবাদত, যা আদায়ের মাধ্যমে আল্লাহর সন্তুষ্টি ও বিশেষ মর্যাদা লাভ করা যায়। আল্লাহ আমাদের সবাইকে এর গুরুত্ব ও ফজিলত বুঝে তদানুযায়ী আমল করার তাওফিক দান করুন। সকলে যেনো সুস্থ্য এবং সুষ্ঠু ভাবে হজ্জ আদায় করতে পাড়েন সেই কামনা করছি।
কুরআনের আলোকে হজ্জের গুরুত্ব : মহান আল্লাহতায়ালা আরও বলেন, ‘আর তুমি মানুষের মাঝে হজের ঘোষণা প্রচার করে দাও। তারা তোমার কাছে আসবে হেঁটে এবং সব ধরনের (পথশ্রান্ত) কৃশকায় উটের ওপর সওয়ার হয়ে দূরদূরান্ত থেকে। যাতে তারা তাদের (দুনিয়া ও আখিরাতের) কল্যাণের জন্য সেখানে উপস্থিত হতে পারে এবং রিজিক হিসাবে তাদের দেওয়া গবাদিপশুগুলো জবেহ করার সময় নির্দিষ্ট দিনগুলোতে তাদের ওপর আল্লাহর নাম উচ্চারণ করতে পারে’। [সূরা হজ, ২২/২৭-২৮]।
হাদিসের আলোকে হজ্জের গুরুত্ব : হজরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন- রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘ইসলাম পাঁচটি স্তম্ভের ওপরে প্রতিষ্ঠিত ১. তাওহিদ ও রিসালাতের সাক্ষ্য প্রদান করা এ মর্মে যে, আল্লাহ ছাড়া কোনো উপাস্য নেই এবং মুহাম্মাদ (সা.) তার বান্দা ও রাসূল। ২. নামাজ কায়েম করা ৩. জাকাত প্রদান করা। ৪. হজ সম্পাদন করা। ৫. রমজানের রোজা পালন করা’। [সহিহ বুখারি, হাদিস নং ৮]।
হজ্জের ফজিলত ও তাৎপর্য : ‘আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূল (সা.) বলেছেন-‘যে ব্যক্তি আল্লাহর উদ্দেশ্যে হজ করেছে, যার মধ্যে সে অশ্লীল কথা বলেনি বা অশ্লীল কার্য করেনি, সে হজ থেকে ফিরবে সেদিনের মতো (নিষ্পাপ অবস্থায়) যেদিন তার মা তাকে প্রসব করেছিলেন’। [সহিহ বুখারি, হাদিস নং ১৫২১]। অর্থাৎ সে কবিরা-সগিরা, প্রকাশ্য-গোপনীয় সব গুনাহ থেকে ওইরূপ মুক্ত হয়ে ফিরে আসে, যেরূপ একজন শিশু গুনাহ মুক্ত হয়ে জন্মগ্রহণ করে। [ইবনু হাজার, ফাতহুল বারী ৩/৩৮২]
হজ্জ ও ওমরাহকারীর দোয়া কবুল করা হয় : হজরত জাবির (রা.) বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন-
‘হজ ও ওমরাহকারীরা আল্লাহর প্রতিনিধি দল। তারা দোয়া করলে তাদের দোয়া কবুল করা হয় এবং তারা কিছু চাইলে তাদের তা দেওয়া হয়। [মুসনাদে বাযযার, হাদিস: ১১৫৩]। ইবনে ওমর (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-
হজ্জের একমাত্র প্রতিদান জান্নাত : ‘হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূল (সা.) বলেছেন- ‘এক ওমরাহ অপর ওমরাহ পর্যন্ত সময়ের (সগিরা গুনাহের) কাফফারাস্বরূপ। আর জান্নাতই হলো হজে মাবরুর বা কবুল হজের একমাত্র প্রতিদান’। [সহিহ বুখারি, হাদিস নং ১৭৭৩]।
হজ্জের জন্য খরচ করার ফজিলত : হজরত বুরাইদা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন- ‘হজের জন্য খরচ করা আল্লাহর রাস্তায় খরচ করার মতোই, যার সওয়াব সাতশ গুণ পর্যন্ত বৃদ্ধি পায়।’ [মুসনাদে আহমাদ, হাদিস : ২৩০০০]।
হজ্জ অন্যতম শ্রেষ্ঠ আমল : ‘হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূল (সা.)কে জিজ্ঞেস করা হলো, কোন আমলটি সর্বোত্তম? তিনি বললেন, ‘শ্রেষ্ঠ আমল হলো আল্লাহ ও তার রাসূলের ওপরে ইমান আনা। বলা হলো, তারপর কী? তিনি বললেন, আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করা। জিজ্ঞেস করা হলো, তারপর কী? তিনি বললেন, কবুল হজ’। [সহিহ বুখারি, হাদিস নং ১৫১৯]।
আপনার মন্তব্য প্রদান করুন...