শনিবার, ২৮ জানুয়ারী ২০২৩, ০২:১৩ পূর্বাহ্ন
বিডি নিউজ ৭১ ডেস্কঃ
১৯৭৫ সালের কালো রাতের পর বাংলার ইতিহাসের এক কালো দিন ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট। বাংলা বর্ষপরিক্রমায় ভাদ্র মাস। সেদিন বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে সমাবেশে বক্তৃতা করার কথা আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার। দিনভর প্রস্তুতি চলছিল তার। দুপুরের পর থেকে সমাবেশ স্থলে কর্মীদের আগমন ঘটতে থাকে। একটা ট্রাক জোগাড় করে বানানো হয়েছিল উন্মুক্ত মঞ্চ। প্রিয় নেত্রী এলেন। উঠলেন মঞ্চে। উপস্থিত নেতা-কর্মীদের মধ্যে চাঞ্চল্য। তিনি বক্তৃতা শেষ করে আনতেই শুরু হলো গ্রেনেড হামলা।
জাতীয় শ্রমিকলীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আলহাজ্ব কাউসার আহম্মেদ পলাশ বলেন- একটি বিষয় সব সময় আমাকে ভাবায়, বাঙালির যে কোনো অধিকার রক্ষায়, স্বাধীনতা-সংগ্রামে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সবসময় নেতৃত্ব দিয়ে এসেছে, সব সময় গণমানুষের পাশে থেকেছে; অথচ সেই দলটির প্রতিই বারবার আঘাত এসেছে! এই দেশে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বাংলাদেশের স্বাধীনতার স্থপতি জাতির পিতাকে পরিবারসহ নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। বিদেশে থাকায় ভাগ্যক্রমে বেঁচে যান জাতির পিতার দুই মেয়ে শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের লক্ষ লক্ষ কর্মী বুকে পাথরচাপা কষ্টের পরেও আশায় বুক বাঁধে, একদিন জাতির পিতার রক্তের উত্তরসূরি দলের দায়িত্ব নেবেন। জাতির পিতার সোনার বাংলা গড়বেন। ১৯৮১ সালে সেই মাহেন্দ্রক্ষণ, যখন বঙ্গবন্ধুর জ্যেষ্ঠ কন্যা দেশে ফেরেন এবং আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব নেন। কিন্তু জননেত্রী শেখ হাসিনার জনপ্রিয়তা, তাঁর রাজনৈতিক প্রজ্ঞা, দৃঢ় নেতৃত্ব, মননশীল চিন্তা আর বাংলাদেশের মাটি ও মানুষের জন্য সীমাহীন ভালোবাসা ইত্যাদি বিষয়কে রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা করতে ব্যর্থ হয়েই তাঁকে হত্যার জন্য বারবার চেষ্টা চালায় বিএনপি-জামাতের মদদে জঙ্গীগোষ্ঠী।
২০০৪ সালের ২১ আগস্ট ছিল যার এক ভয়াবহতম ঘৃণ্য চক্রান্ত। সেদিন ঢাকার বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে আওয়ামী লীগ আয়োজিত সন্ত্রাসবিরোধী জনসভায় জাতির পিতার রক্তের উত্তরসূরি জননেত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশে গ্রেনেড ছোঁড়া হয়। আল্লাহর অশেষ রহমত, কোটি মানুষের দোয়ায় প্রাণে বেঁচে যান জননেত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, তারা সেদিন আমাদের আদর্শ হত্যার অপচেষ্টায় মেতে উঠেছিলো। কিন্তু সেদিনের নৃশংস ঘটনায় প্রাণ হারায় আওয়ামীলীগের ২৪ জন নেতাকর্মী। আহত হন কয়েকশ জন। আসলে জাতির পিতার রক্তের কেউ যাতে বেঁচে থাকতে না পারে, এটাই ষড়যন্ত্রকারীরা চায়। কারণ, জাতির পিতার রক্তের উত্তরসূরি মানেই মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় সমৃদ্ধ বাংলাদেশের প্রতিচ্ছবি। বঙ্গবন্ধুর রক্তের উত্তরসূরি মানেই বাংলাদেশ ও এদেশের মানুষের নিরাপত্তা। আর এসবকেই ভয় মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী রাজনৈতিক ও জঙ্গীগোষ্ঠীর।
কাউসার আহম্মেদ পলাশ বলেন, কেন বার বার এই হত্যাচেষ্টা? উত্তরও খুব সহজ। ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের অভ্যুদয় এক আদর্শ ধারণ করে। ধর্মনিরপেক্ষতা, গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্রের আদর্শে বাংলাদেশের গড়ে ওঠার বিপক্ষে যাদের অবস্থান ছিল, তাদের ষড়যন্ত্রেই ১৯৭৫ সালে সপরিবারে হত্যা করা হয় বাংলাদেশের মহান স্থপতি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। তাঁকে হত্যা করলেও হত্যা করা যায়নি তাঁর আদর্শ। তাঁর সুযোগ্য কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ এগিয়ে চলেছে তাঁরই আদর্শের পথ ধরে। মুজিবাদর্শের বাংলাদেশ যারা চায় না, তারাই বার বার শেখ হাসিনাকে হত্যার চেষ্টা করেছে। ১৯৭৫ সালে সপরিবারে বঙ্গবন্ধু হত্যা কিংবা ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলা একই সূত্রে গাঁথা। এর নেপথ্যে কাজ করেছে আদর্শ হত্যার চেষ্টা। বাংলাদেশকে প্রগতির পথ থেকে, মুজিবাদর্শের পথ থেকে সরিয়ে দিতে চায় যারা, তারাই বার বার এই অপচেষ্টা করেছে। এ চেষ্টা যে তারা আরও করবে, এ আশঙ্কা আমাদের অমূলক নয়।
এদেশে যেন আর কখনোই ১৫ আগস্ট বা ২১ আগস্টের মতো ঘটনা না ঘটে। এজন্য সবাইকে সজাগ থাকতে হবে। আর এসব ঘটনার সাথে জড়িত ও নেপথ্যে যারা আছে, তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। ১৫ আগস্ট ও ২১ আগস্ট শহীদ সবার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাই।
আপনার মন্তব্য প্রদান করুন...